কবিতা

তীব্র জলভ্রমি

বিরজার পারে

আমি-কি একাই, কেকা, না তুমিও একা
বিরজা নদীর পারে? আমাদের দেখা
….রুপালি তুফানে—দু’টি খোলামকুচি নাও—

….পলকে সোনার ছবি, পলকে উধাও।
একটাদিন পরে-পরে প্রতি-জন্মদিন,
নাকি আমরা পরস্পর-জন্মের অধীন—

….মৃত্যুর অধীন? যেন সূর্য আর চাঁদ—
….নিজের লেজুড় খোঁজা—অগাধ অগাধ—
বিরজার পারে রাঙা বৈকুণ্ঠের মেলা,

নিষ্কাইন্ধার দরাদরি—দড়ির খেলায়
….ফিয়ারলেস তুমি খোলো, খোলনলচে বেবাক,
….রাতারগুলের সাপ, বা বাদার বাঘ

পিলপিল বেরিয়ে আসছে, গোধূলি লাগার
লগে-লগে—আমরা একা—আমরা একাকার।

১৫ মে ২০২৩

ভাটিতে উজাই

আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি—অন্ধকার—
….আস্তে-আস্তে হ’য়ে যাচ্ছ—মমি—
………আমার মেডুসা-চোখে, আলো!

এ-ঘাটে বটের নীচে মধুমতী, যাতে
….লক্ষ মৃত নক্ষত্রেরা নামে,
……..বাদুড়ের মতো ঝোলে—গাঙে

রক্ত বয়—আলকাতরা-আঠালো।

তবু, একা, পদ্মাপার—
….আবার কলিমহর ছেড়ে যাচ্ছি—রাতে—
……..অন্তর্মুখী ইতিহাস-যানে,

তীব্র জলভ্রমি… সঙ্গে—প্রমি।

২০ মে ২০২৩

আটাশ বছর আগের একদিন

পুরো নাম মনে নাই, শেষে ‘বেওয়া’ ছিল:
একজন মায়ের ধন ঝেঁপে দেওয়া ছিল।

২০ মে ২০২৩

মোতিচুর

আমার নুনের ব্যাবসা, তোমার পানির,
আমাদের মাঝে একটা ডানা-ভাঙা নীড়।

২০ মে ২০২৩

সুলেখা

লিখি বালুচর লিখি বেগুনি
না না ফুল নয় লিখি রঙটাই
মেলে বালুচর-বেগুনির রাইম

তুমি সুলেখা আমি ঝরনা
কালো মগডাল দূরে সায়ানাইড
নীলে সাদা গাল-গুলি উড়ছে

আগে বালুচর পিছে বেগুনি
ছোটে মগডাল পাখি ধরতে
ওরে চাঁদ যা মেঘে দাঁড় বা

কী কাহারবায় কুয়া উথলায়
আমি সে-কাগজ যাতে ঝরনার
ঝরে বেগুনি নাচে নীল নিব্

অয়ি সুলেখা হাসো সায়ানাইড
বুকে রোমালির কাশে তড়কা
আমি ভাসছি ফেলে আসছি

জলে-স্বচ্ছ কত কঙ্কাল

২১ মে ২০২৩

লেখাটি শেয়ার করুন :

সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ

সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ। জন্ম ঢাকায়, ১৯৬৫। ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। লেখালিখি প্রকাশ পেতে শুরু করে মধ্য-আশি থেকে, নানা লিটল ম্যাগাজিনে মূলত। ১৯৯৫ থেকে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে বসবাস। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ : তনুমধ্যা (১৯৯০, পুনঃ ২০২৩), পুলিপোলাও (২০০৩), কবিতাসংগ্রহ (২০০৬), গর্দিশে চশমে সিয়া (২০০৮), ঝালিয়া (২০০৯), মর্নিং গ্লোরি (২০১০), ভেরোনিকার রুমাল (২০১১), হাওয়া-হরিণের চাঁদমারি (২০১১), আমাকে ধারণ করো অগ্নিপুচ্ছ মেঘ (২০১২), Ragatime (২০১৬), শ্রেষ্ঠ কবিতা (২০১৮), ইশকনামা (২০১৯), দশ মহাবিদ্যা (২০২০), ছুরিতে ঠিকরানো আঁধিয়ার (২০২০), ডাকা ঢাকে (২০২১), ৯কার বেদের নাম তুমি সে-৯কার (২০২৩)। গদ্যগ্রন্থ :  কালকেতু ও ফুল্লরা (উপন্যাস ২০০২, পুনঃ ২০১৯), মাতৃমূর্তি ক্যাথিড্রাল (গল্প ২০০৪, পুনঃ ২০১৯), চণ্ডীদাস দ্যাখে যুগ যুগ (প্রবন্ধ, ২০২১)। অনুবাদ : অন্তউড়ি (চর্যাপদের পদ্য-রূপান্তর, ১৯৮৯, ২য় সং. ২০২৩), নির্বাচিত ইয়েটস (ডব্ল্যু বি ইয়েটসের নির্বাচিত কবিতার অনুবাদ, ১৯৯৬) এলিয়টের প’ড়ো জমি (টি এস এলিয়টের ‘দ্য লাভ সং অব জে. অ্যালফ্রেড প্রুফ্রক’ এবং ‘দ্য ওয়েস্ট ল্যান্ড’-এর অনুবাদ, ১৯৯৮) কবিতা ডাউন আন্ডার (নির্বাচিত অস্ট্রেলিয় কবিতার অনুবাদ, অংকুর সাহা ও সৌম্য দাশগুপ্ত-র সাথে, ২০১০), স্বর্ণদ্বীপিতা (বিশ্ব-কবিতার অনুবাদ ২০১১), এমিলি ডিকিনসনের নির্বাচিত কবিতা (প্রকাশিতব্য)। সম্পাদনা : প্রসূন (যৌথ), অগ্রবীজ (যৌথ)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!