প্রবন্ধসাহিত্য

শব্দকোষ : ভাষার সংবেদ

‘ডিকশনারি (Dictionary)’ পৃথিবীব্যাপী বহুল প্রচলিত একটি শব্দ; জগতের অণু পরিমাণ খবরও যাদের কাছে পৌঁছে তারাই এই শব্দের বিষয়ে ওয়াকিবহাল। রোমানরা লাতিন ভাষায় যাকে ডিকশনারি বলে তাকেই আমরা বলি ‘অভিধান’। মুহম্মদ এনামুল হকের মতে, “ভাষার বিবর্তন প্রথমে মুখে মুখে শুরু হয়; পরে গানে-গানে, গাথায়-গাথায় ও লেখায়-পড়ায় এবং পরিশেষে সাহিত্যে স্থান পাইয়া আভিজাত্য লাভ করে। তখন পণ্ডিত ব্যক্তিরা সাহিত্যে ব্যবহৃত ভাষা হইতে শব্দ চয়ন করিয়া যেই ভাণ্ডারে শব্দগুলিকে অভিধা, লক্ষণা ও ব্যঞ্জনাসহ জমা করিয়া রাখেন, তাহারই সাধারণ নাম ‘অভিধান বা শব্দকোষ’।” কিন্তু যে ভাষায় সাহিত্যই অনুপস্থিত সে ভাষার কী হবে! সে ভাষার মৌখিক কথ্যরূপ থেকে যে শব্দসমূহ ভাণ্ডারে জমা হবে তা-ই সেই ভাষার অভিধান। ভাষাবিজ্ঞানীদের কাছে যে কোনো ভাষার কথ্যরূপই সেই ভাষার প্রকৃত স্বরূপ, তা সে ভাষার সাহিত্য থাকুক বা নাই থাকুক। ক্যামব্রিজ ডিকশনারিতে বলা হয়েছে—Dictionary is a book that contains a list of words in alphabetical order and explains their meanings, or gives a word for them in another language; an electronic product giving similar information on a computer, smartphone, etc.

প্রায় সব স্বাভাবিক মানবশিশুই ৫ থেকে ৮ বছর বয়সের মধ্যেই ভাষার জটিল ও খুঁটিনাটি নিয়মপদ্ধতিগুলো শিখে যায় (Fromkin and Rodman.১৯৭৯)। অর্থাৎ, একটা ভাষা শেখার সাথে অভিধানের কোনো সম্পর্ক নাই। তথাপি যুগ যুগ ধরে মানব জাতির ভাষার ইতিহাসে অভিধান প্রণয়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পৃথিবীতে মোট অভিধানের সংখ্যা আজ পর্যন্ত অজ্ঞাত; খ্রিস্টপূর্ব ২৩০০ সালের আকাডিয়ান অভিধান থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত কত শত অভিধান সংকলিত হয়েছে তার কোনো ইয়ত্তা নাই। অভিধান প্রণয়নে এর প্রণেতারা যে যথেষ্ট শ্রম, মেধা ও সময় ব্যয় করেন তা বলাই বাহুল্য। ১৮২৮ সালে নোয়া ওয়েবস্টার দীর্ঘ ২২ বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে রচনা করেন আমেরিকার ‘An American Dictionary of the English Language’। এ কাজ করতে গিয়ে তিনি এ্যাংলো-স্যাক্সন, সংস্কৃত ভাষাসহ মোট ২৬টি ভাষা শিখেছিলেন। হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় ‘বঙ্গীয় শব্দকোষ’ সংকলন করতে একটানা প্রায় চল্লিশ বছর কাজ করেন। তিনি শব্দ প্রতিশব্দ ব্যুৎপত্তি খুঁজতে নানান মানুষের কাছে গিয়েছেন আর নানান জায়গায় ভ্রমণ করেছেন। প্রত্যেক অভিধান সংকলকই দিনের পর দিন মাসের পর মাস অসীম ধৈর্য অধ্যবসায় সহযোগে এক একটি শব্দের ভাণ্ডার তৈরি করেছেন। নিশ্চই অভিধানের গুরুত্ব আছে, বিধায় তারা আজীবন এই কাজ করে গিয়েছেন।

ভাষা হল যোগাযোগের মাধ্যম। প্রতিটা যোগাযোগ মাধ্যমেরই নিজস্ব ভঙ্গি বা রীতি থাকে। এখানেই খুঁজে পাওয়া যায় ভাষার অনন্যতা। উত্তর তুরস্কের পনটিক পাহাড়ের অধিবাসীরা যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে বেছে নিয়েছেন পাখির কলতান। তারা এই ভাষাকে বলে ‘Kus dili’ ভাষা, অন্যরা বলে ‘পাখির ভাষা’। Kuskoy এলাকায় বসবাসকারী Muazzez Kocek এই ভাষায় বর্তমানে সবচেয়ে বেশি পারদর্শী। তার মতে এখন এই গ্রামের প্রতি ১০০ জনে মাত্র ৫০ জন Kus dili ভাষায় কথা বলতে সক্ষম। মুখে আঙুল ঢুকিয়ে দাঁত, জিহ্বা বিশেষভাবে ব্যবহার করে শিস দিয়ে এই ভাষায় কথা বলা হয়। দুই হাতের বিভিন্ন আঙুল ব্যবহার করে পাখির শিসের মতো নানান তরঙ্গের ধ্বনি তৈরি করা হয়। কখনো কখনো আঙুল বাদে শুধু দাঁত, জিহ্বা আর ঠোঁটের সাহায্যে শিস দেওয়া হয়। এই ধ্বনিগুলো পর পর পাখির গানের মতো করে উচ্চারণের প্রয়াস নেওয়া হয়। যেহেতু তারা পাহাড়ে একে অপর থেকে অনেক দূরে দূরে থাকেন ফলে এই পাখির ভাষার সাহায্যে তারা প্রতিবেশিকে বিভিন্ন খবর অতি দ্রুত পৌঁছে দিতে পারেন। সাধারণত প্রতিবেশিকে চায়ের নিমন্ত্রণ দিতে, কোনো কাজে সাহায্য চাইতে, রাস্তায় গাড়ির উপস্থিতির খবর দিতে, কারো জন্ম, বিয়ে, মৃত্যুর সংবাদ দিতে এই ভাষা ব্যবহৃত হয়। পাহাড়ে আধা মাইল দূর থেকেও এই ভাষায় কথা বললে কথা বোঝা য়ায়।

ভাষা এবং বিবর্তন অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। পৃথিবীর এমন কোনো ভাষা নাই যা বিবর্তিত হয়নি, যা স্বয়ংসম্পূর্ণ। সব ভাষাই অন্যান্য বহু ভাষার শব্দ নিজস্ব নিয়মে গ্রহণ বা বর্জন করে। শব্দের বিবর্তন হচ্ছে ভাষার সৌন্দর্য।

কোনো ভাষার ধ্বনিগুলো জানলেই এর দ্বারা ঠিক কী বোঝায় তা কিন্তু জানা হয় না। যে কোনো ভাষাই শিখতে হয়, রপ্ত করতে হয়। চমস্কির মতে, ‘প্রত্যেক মানুষই তার নিজের মধ্যে এক সেট ভাষাসূত্র আত্মস্থ করে যেগুলোর সঠিক ও দ্রুততম নিরিখে সে সুগঠিত বাক্য/বাক্যাংশ তৈরি করতে পারে।’ ভাষা শিখতে হলে সে ভাষাটা শিশুকে শুনতে হবে। আবার শুধু শোনাই যথেষ্ট নয়। এক্ষেত্রে একটি ঘটনা প্রণিধানযোগ্য। কালা-বোবা এক দম্পতির স্বাভাবিক সন্তান ছিল। তাকে গোড়া থেকেই টিভি দেখতে ও রেডিও শুনতে দেওয়া হত। কিন্তু এতে করেও শিশুটির কথা বলার কোনো দক্ষতা জন্মায়নি—যদিও বছর তিনেকের মধ্যেই সে বাবা মায়ের ব্যবহৃত ‘ইঙ্গিত ভাষা’য় পারদর্শী হয়ে উঠেছিল (Farb ১৯৭৩)। তাই বলা যায় ভাষা আয়ত্তের ক্ষেত্রে অপরের সাথে মিথস্ক্রিয়া চালিয়ে যাওয়া একান্ত প্রয়োজন।

যে কোনো ভাষাকে নিষ্প্রয়োজন মনে করার অর্থই হল ঐ ভাষার সর্বনাশ ডেকে আনা। পৃথিবীতে এখনো প্রায় চল্লিশ হাজার ভাষা আছে এবং প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার ভাষা বিলুপ্ত হচ্ছে। যখন মানুষ তার ভাষাকে হারায় তখন সে তার সংস্কৃতিকেও হারায়; সে হারায় তার আত্মপরিচয়। ভাষা হচ্ছে গোষ্ঠীর পরিচয়ের শক্তিশালী চিহ্ন। গোষ্ঠী ও জাতির ইতিহাস স্থানান্তরিত হয় তার ভাষার মাধ্যমে। ‘Ethnologue’ এর সম্পাদক এম পল লুইস এর মতে, ‘মানুষ যদি নিজেদের ভাষাকে গুরুত্বহীন বলে মনে করতে শুরু করে, তবে তারা তাদের আত্মপরিচয়কেও অচিরেই গুরুত্বহীন মনে করে।’ একটি ভাষার বিলুপ্তিতে আমরা আসলে অনেক কিছুই হারাই। ফরাসি ভাষাবিদ ক্লদে হ্যাজেজের মতে, ‘যেটা আমরা হারিয়েছি সেটা হল একটা প্রকাণ্ড সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, প্রকৃতিজগতের সঙ্গে এবং নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক প্রকাশের পন্থা, নিজেদের পারিবারিক পরিধির মধ্যে এবং স্বজাতির মানুষদের মধ্যে।’

শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সালিকোকো বলেন, ‘ভাষা ধরে রাখার দায় তার নিজ জনগোষ্ঠী থেকে ভাষাবিদদেরই বেশি, একথা নির্মম হলেও বাস্তব।’ আসলেই যেন তাই! আঠারো শতকের যুক্তরাজ্যের কর্নারল-এর একটি সম্প্রদায়ের ভাষা ‘কর্নিশ’ প্রামাণ্য লিপির অভাবে বিলুপ্ত হতে বসেছিল। ২০০৮ সালে ভাষাবিদরা এই ভাষার প্রামাণ্য লিপির রূপ দেওয়ার পর হাজার হাজার মানুষ এখন এই ভাষা ব্যবহার করছে, যদিও বানানতত্ত্ব নিয়ে বিতর্ক আছে। কিছু কিছু বিদ্যালয়ে এই ভাষা শেখানো হচ্ছে। সাম্প্রতিককালে ইউনেস্কো ভাষাটির ‘বিলুপ্ত’ তকমা সরিয়ে ‘বিপজ্জনকভাবে বিপন্ন’ ঘোষণা করেছে। তুরস্কের পূর্ব ব্ল্যাক-সি উপকূল এবং আডজারার স্বশাসিত প্রজাতন্ত্রের কিছু অংশে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ ‘লাজুরি/লাজ’ নামক ভাষা ব্যবহার করত। ধীরে ধীরে এই কথ্য-মৌখিক ভাষা হারিয়ে যেতে বসে। পরবর্তীকালে ২০০৬ সালে প্রথম লাজুরি অভিধান বা শব্দকোষ সংকলিত হয়। সেই সাথে বিভিন্ন বই লাজুরি ভাষাতে অনুবাদ করা হয়। ২০১১ সালে ইস্তানবুলের বসফোরাস বিশ্ববিদ্যালয় লাজুরি ভাষা শিক্ষা চালু করে।

কোনো ভাষার অভিধান ঐ ভাষাকে অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করে, এমনকি শাসনও করতে পারে। ব্যবহারকারীরা অভিধান দেখে শব্দ পছন্দ করে, বানান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়। কোনো শব্দ জানলেই যে তার অর্থ বোঝা গেল তা নয়। অভিধান এই অর্থ বুঝিয়ে দিতে সক্ষম। অভিধান দেখে শব্দের উচ্চারণ যাচাই করা যায়। কোনো ভাষার গভীরে প্রবেশ করতে হলে অভিধান হল তার সোপান। অভিধান ভাষার শব্দ ও অর্থের ভিত্তি মজবুত করে। ভাষা এবং বিবর্তন অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। পৃথিবীর এমন কোনো ভাষা নাই যা বিবর্তিত হয়নি, যা স্বয়ংসম্পূর্ণ। সব ভাষাই অন্যান্য বহু ভাষার শব্দ নিজস্ব নিয়মে গ্রহণ বা বর্জন করে। শব্দের বিবর্তন হচ্ছে ভাষার সৌন্দর্য। সংস্কৃত ‘তীক্ষ্ম’ শব্দ বিবর্তিত হয়ে বাংলায় হয়েছে ‘তুখোড়’, আবার এই তুখোড় বিবর্তিত হয়ে ঢাকাইয়া সোব্বাসীতে হয়েছে ‘তোকখার’। তীক্ষ্ম শব্দের অর্থ তুখোড় শব্দে এসে পরিবর্তিত হলেও তুখোড় শব্দের অর্থ তোকখার শব্দে অপরিবর্তিত। এই বিবর্তন বা পরিবর্তনের কারণেই বলা হয়ে থাকে যে, প্রতিটা অভিধান প্রকাশের পরের দিনই বাতিল বলে গণ্য।

দুই

পুরাতন ঢাকার ঢাকাইয়া সোব্বাসীদের মৌখিক-কথ্য ভাষাও দীর্ঘ প্রায় চারশত বছর যাবৎ পরিবর্তিত হয়ে বিভিন্ন চড়াই-উতড়াই পেরিয়ে ২০২১ সালে ‘বাংলা-ঢাকাইয়া সোব্বাসী ডিক্সেনারি’তে এসে লিখিত রূপ পেয়েছে। মৌখিক-কথ্য ভাষাকে বিলুপ্ত হওয়া থেকে রক্ষার প্রধান হাতিয়ার একটি যথাযথ এবং সময়োপযোগী লিপি। ‘বাংলা-ঢাকাইয়া সোব্বাসী ডিক্সেনারি’তে সংকলক বাংলা বর্ণমালাকে সোব্বাসীদের বর্ণমালা হিসাবে ব্যবহার করেছেন; কারণ বর্তমানে সোব্বাসীরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলা বর্ণমালা ব্যবহার করেই তাদের ভাষা লিখছেন। এতে করে সোব্বাসীদের নতুন কোনো লিপি বা বর্ণমালা শেখার প্রয়োজন পড়ছে না। সোব্বাসীরা বাংলা বর্ণমালায় পারদর্শী এবং লিখতে-পড়তে সক্ষম। শত শত বছর ধরে পরিবর্তনের ফলে একশত বছর পূর্বে সোব্বাসীদের ভাষা ঠিক কেমন ছিল তা জানার কোনো উপায় নাই, যেহেতু ভাষাটি মৌখিক ও কথ্য এবং শ্রুতির মাধ্যমে পরম্পরায় সঞ্চারিত হয়েছে। এই ভাষাতেই সোব্বাসীদের নিজস্ব গল্প, কিসসা-কাহিনি, প্রবাদ-প্রবচন, ছড়া, শব্দাবলি শ্রুতির মাধ্যমে বহমান। এই সদা বহমান মৌখিক-কথ্য ভাষাকে কাগজের পাতায় তুলে আনার কাজ ততটা সহজ ছিল না।

গোষ্ঠীবদ্ধ মানুষ কী চিন্তা করে কী ধারণা করে, তার সামাজিক রীতি-রেওয়াজ কেমন তার ছবি হচ্ছে তার নিজস্ব ভাষা।

সোব্বাসী অভিধানের সম্পাদক বাংলা শব্দের সোব্বাসী প্রতিশব্দ নিজে যা জানত তা লিপিবদ্ধ করার পর যে সমস্ত শব্দ নিয়ে সংশয় থাকত তা জানতে বয়োজ্যেষ্ঠ সোব্বাসীদের শরণাপন্ন হত। আবার সোব্বাসীদের ফেইসবুক গ্রুপে পোস্ট দিয়েও সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হত। দেখা গেল বয়োজ্যেষ্ঠ সোব্বাসীদের শব্দভাণ্ডার বৈচিত্র্যপূর্ণ; তারা যেসব শব্দ ব্যবহার করেন বর্তমান প্রজন্ম তার অনেকাংশই জানে না, এমনকি কখনো শোনেনি। কিছু বাংলা শব্দ আছে যার সোব্বাসী প্রতিশব্দ নিয়ে সোব্বাসীদের মাঝেই দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকায় তা অভিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়নি; যেমন—রংধনু। যদিও অভিধান প্রকাশের দীর্ঘ দুই বছর পর জানা গেল ‘রংধনু’র সোব্বাসী প্রতিশব্দ ‘ধোনাকবান’। অসংখ্য শব্দ অভিধান প্রকাশের পর সম্পাদকের কাছে আসায় সেসবও অভিধানে নাই, ফলে সোব্বাসীরা অসংখ্য শব্দ ব্যবহার করলেও অভিধানে শব্দভুক্তি মাত্র ১৫,৩০৪টি। বাংলাদেশের বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষার অভিধান পাঠ করতে গিয়ে দেখা যায় ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ সম্পাদিত বাংলাদেশের আঞ্চলিক ভাষার অভিধান-এ ঢাকা জেলার যে সব শব্দ দেওয়া আছে তাতে সোব্বাসীদের শব্দও আছে, যেমন— আন্দা কুন্দা, উলতি, ডাকু। আবার এমন কিছু শব্দ আছে যা সোব্বাসীরা ব্যবহার করে কিন্তু জেলার নাম হিসাবে ঢাকা দেওয়া নাই, যেমন—আন্তাযি, উকড়ো, চু‘র্ত। ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ জীবনের দীর্ঘ সময় পুরাতন ঢাকার সোব্বাসীদের মহল্লায় বসবাস করেছেন, তাঁর সম্পাদিত অভিধানে অঞ্চলের নামটি অজ্ঞাত কারণে অনুল্লিখিত রয়ে গেছে।

তিন

ভাষা পৃথিবীর যে কোনো এলাকার যে কোনো গোষ্ঠীর গোত্রের জাতির বিশ্বাস এবং সংস্কৃতির ধারক। একটা গোষ্ঠীর মানসিক চিন্তার রূপকার হচ্ছে তার ভাষা। গোষ্ঠীবদ্ধ মানুষ কী চিন্তা করে কী ধারণা করে, তার সামাজিক রীতি-রেওয়াজ কেমন তার ছবি হচ্ছে তার নিজস্ব ভাষা। একটা জাতি গোষ্ঠীর পৃথিবী সম্পর্কে চেতনা ও জীবন নিয়ে ভাবনার মূল অস্ত্রই তার ভাষা। তাই ভাষাকে বিলুপ্ত হতে দেওয়া যায় না, হওয়া উচিতও নয়।

সহায়ক গ্রন্থপঞ্জি ও লিংক

গ্রন্থ
আহমদ শরীফ : বাংলা একাডেমী সংক্ষিপ্ত বাংলা অভিধান [২০০২], বাংলা একাডেমি, ঢাকা।
ডক্টর মুহম্মদ এনামুল হক : বাংলা একাডেমি ব্যবহারিক বাংলা অভিধান [২০১৫], বাংলা একাডেমি, ঢাকা।
ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ : বাংলা একাডেমি বাংলাদেশের আঞ্চলিক ভাষার অভিধান [২০২১], বাংলা একাডেমি, ঢাকা।
মহাম্মদ দানীউল হক : নির্বাচিত ভাষাবিজ্ঞান প্রবন্ধ [২০১১], বাংলা একাডেমি, ঢাকা।
মো. শাহাবুদ্দিন সাবু : বাংলা-ঢাকাইয়া সোব্বাসী ডিক্সেনারি [২০২১], তাকিয়া মোহাম্মদ পাবলিকেশন্স, ঢাকা।
মোহাম্মদ হারুন রশিদ : বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত আরবি ফারসি উর্দু শব্দের অভিধান [২০২৩], বাংলা একাডেমি, ঢাকা।
রাজীব হুমায়ুন : সমাজভাষাবিজ্ঞান [২০০১], আগামী প্রকাশনী, ঢাকা।
সৌমেন সাহা : মৃত, বিলুপ্ত ও বিপন্ন ভাষার কথা [২০২০], অনুপম প্রকাশনী, ঢাকা।

লিংক
https://thekidshouldseethis.com
https://dictionary.cambridge.org
https://www.merriam.webster.com

লেখাটি শেয়ার করুন :

মো. শাহাবুদ্দিন সাবু

মো. শাহাবুদ্দিন সাবু জন্ম ১৯ নভেম্বর ১৯৭৬, পুরাতন ঢাকার আগামসিলেন মহল্লায়। বর্তমানে সাভার সরকারি কলেজে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত। প্রকাশিত গ্রন্থ : বাংলা-ঢাকাইয়া সোব্বাসী ডিক্সেনারি [অভিধান, ২০২১],  নাগারকা দেওয়াল [কাব্যগ্রন্থ, ২০২৪]।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!