দুটি কবিতা
১৩ বছর পর পয়লাবার ২৪ হ’ল না।
২, ৪, ৬— তারপর উচ্ছন্নে যেত নাকি
ত্রিকোণমিতির তারাগণনা?
কাচের আকাশে তুমি দিল ছুঁড়লে, পাখি,
আমার চেয়ে সে-তো ঠুনকো না…
ত্রিকোণমিতি— এক জ্যামুক্ত জ্যামিতি—
পরিক্রমী ক্রমেলক কাঁটার মুকুট প’রে
চড়তে গেছে উল্টো-ক্রুশে মরুগিরিখাতে;
ঝমঝম জমজম আলকাতরা-লাভার; ন’ড়ে
উঠল গিরিদরী, রুগ্ণ বাঁকা-চাঁদে
ঝুলল মুকুট আর খুলল শরীর আর দুলল স্যালাইন।
টেইলরমেইড মেসায়া, বুয়েট-স্নাতক, তিনি
ওয়াটার-ডিভিনেশন-প্রাজ্ঞ, চাপাতি-চকচকে ত্বক্,
জলপাই-জলে ফাটল আবার জল-মাইন…
তুমি দিল ছুঁড়লে আকাশের কাচে,
পাখি, আমার চেয়ে সে ঠুনকো না,
বালিতে বেবাকই লেখা আছে।
ত্রিভুজে ঝরল একটা শুকনো জলকণা।
ইলুমিনাতির মতো মাছের
পাথরের হা-চোখের মতো— তিনকোণা।
৯ মার্চ ২০২৩
আমাকে অগ্রাহ্য ক’রে, বামে
সর্বখুনে খুনান্বিতা নামে
লুঙ্গিতে মিথ্যার দাগ। কুলুঙ্গির মতো
সন্ধ্যার পশ্চিমে জ্বলি। রিকশাওয়ালা পাঁড়
চোগলখোর— চটকানিটা বেশি লাগছে, স্যর?
পরিবার চেতল ক্যান?— চোপবে! আগে বাড়্!
জ্বল্ জ্বল্, চিতাবাঘ, দ্বিগুণ দ্বিগুণ,
সুকতলি কাঁখতলি, জ্বল্, বসন্তবাতাসও,
ভাসো হাসঃ কবিকুলগুরুঃ কালিদাসো
বিলাসঃ— গুলশানে, হুহু, হাওয়া দেয় বাঁশো,
আশোপাশো গলে মোম যদি নেমে যায়
গাড়ির সবুজ শাড়ি। ছদকা বা জবাই
আধা-সীটে মাখোমাখো— ভেঁপু ডাকে, ভাই,
মুইছা দিয়া যান। দেশে ব্রুটাস সবাই।
মহাখালি আমি খালি একাই হাঁটি না।
বড়রাস্তা বন্ধ ক’রে হামারি হাসিনা।
২৫ জুন ২০২৩

সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ।
জন্ম ঢাকায়, ১৯৬৫। ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। লেখালিখি প্রকাশ পেতে শুরু করে মধ্য-আশি থেকে, নানা লিটল ম্যাগাজিনে মূলত। ১৯৯৫ থেকে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে বসবাস।
প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ : তনুমধ্যা (১৯৯০, পুনঃ ২০২৩), পুলিপোলাও (২০০৩), কবিতাসংগ্রহ (২০০৬), গর্দিশে চশমে সিয়া (২০০৮), ঝালিয়া (২০০৯), মর্নিং গ্লোরি (২০১০), ভেরোনিকার রুমাল (২০১১), হাওয়া-হরিণের চাঁদমারি (২০১১), আমাকে ধারণ করো অগ্নিপুচ্ছ মেঘ (২০১২), Ragatime (২০১৬), শ্রেষ্ঠ কবিতা (২০১৮), ইশকনামা (২০১৯), দশ মহাবিদ্যা (২০২০), ছুরিতে ঠিকরানো আঁধিয়ার (২০২০), ডাকা ঢাকে (২০২১), ৯কার বেদের নাম তুমি সে-৯কার (২০২৩)।
গদ্যগ্রন্থ : কালকেতু ও ফুল্লরা (উপন্যাস ২০০২, পুনঃ ২০১৯), মাতৃমূর্তি ক্যাথিড্রাল (গল্প ২০০৪, পুনঃ ২০১৯), চণ্ডীদাস দ্যাখে যুগ যুগ (প্রবন্ধ, ২০২১)।
অনুবাদ : অন্তউড়ি (চর্যাপদের পদ্য-রূপান্তর, ১৯৮৯, ২য় সং. ২০২৩), নির্বাচিত ইয়েটস (ডব্ল্যু বি ইয়েটসের নির্বাচিত কবিতার অনুবাদ, ১৯৯৬) এলিয়টের প’ড়ো জমি (টি এস এলিয়টের ‘দ্য লাভ সং অব জে. অ্যালফ্রেড প্রুফ্রক’ এবং ‘দ্য ওয়েস্ট ল্যান্ড’-এর অনুবাদ, ১৯৯৮) কবিতা ডাউন আন্ডার (নির্বাচিত অস্ট্রেলিয় কবিতার অনুবাদ, অংকুর সাহা ও সৌম্য দাশগুপ্ত-র সাথে, ২০১০), স্বর্ণদ্বীপিতা (বিশ্ব-কবিতার অনুবাদ ২০১১), এমিলি ডিকিনসনের নির্বাচিত কবিতা (প্রকাশিতব্য)।
সম্পাদনা : প্রসূন (যৌথ), অগ্রবীজ (যৌথ)।