শরৎ তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলি
প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের আদিম অস্তিত্ব যেমন জড়িয়ে অন্যদিকে আবেগশাসিত জীবনের ভাব প্রকাশে কবিতা-শ্লোকও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। এটি তার জৈব-আকাঙ্ক্ষারই প্রকাশ। বলা যায় নিসর্গের বিপুল বিস্তার মানবপ্রজাতির আবেগ শাসন করেছিল। ফলে প্রকৃতির রূপ-রস, গন্ধ-সুধা মানুষের জীবনবৈচিত্র্য ও রহস্যের পরিসর নানাভাবে রাঙিয়ে তোলে। বাংলা কবিতার আদি নিদর্শন, চর্যাপদ থেকে সাম্প্রতিক কবিতায়ও চলেছে নিসর্গের গাঢ় উপস্থিতি। মানুষ তো প্রকৃতিরই সন্তান। তবু নিসর্গেরই ছোঁয়ায় মানুষের আবেগ, চিন্তা, যুক্তিবোধ ও চৈতন্যের উদ্ভাসন ঘটে চলেছে।
প্রকৃতি কখনো স্নিগ্ধ, কখনো ভয়ঙ্কর। মানুষ তবু নিসর্গের রুদ্ররোষের ভেতর খুঁজে নেয় অপার আশ্রয়। সে তো ভয়ঙ্কর-সুন্দর। এ বোধহয় অস্তিত্ব ও আবেগের যৌথ রসায়ন। নাকি অপ্রতিরোধ্য প্রকৃতির খেয়াল তুষ্ট করার জন্য মানুষই বেছে নিয়েছে তার মহিমাকীর্তনের পুরাণ-পথ? এই দ্বৈত সত্তাই কি তবে হয়ে উঠেছে মিথজীবী? এভাবেই? ছন্দে, সুরে, রঙে, রেখায়, নৃত্যে দৃশ্যকে করেছে বন্দি। প্রকৃতি কখনো প্রেম, অর্থাৎ জীবনের বিপুল সম্ভাবনা এবং আবেগের মুখরতা আবার কখনো মৃত্যুর অভিজ্ঞতায় বিষাদময়।
সব বিষাদ ও বেদনা যেন ম্লান হয়ে যায় শরতের শুভ্রতায়, সাদা কাশফুল আর মেঘদল তো তারই প্রতীক। কবিরা অনুভব করেছেন বিরহের সৌন্দর্য। শরতের নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা আর শিউলি-বকুল-মল্লিকার সুবাসিত হাওয়ায় তার রূপ বিভাময়।
শরৎ ঋতুও কালিদাসের চোখে বুলিয়ে দিয়েছে মায়ার অঞ্জন। কবির দৃষ্টিতে এই নিসর্গশোভা যেন নববধূর মতো। শরৎকাল যেন কবির আরেক প্রিয়া। প্রকৃতির সঙ্গে নারীপ্রতিমার তুলনা সেখানে ব্যক্তিসত্তাকে বিধৃত করার অভিপ্রায় থেকে নয়, তাতে একান্তই কবিচৈতন্যের সৌন্দর্যপিপাসু সত্তার আকুলতা প্রকাশ পেয়েছে।
শূন্য মন্দির মোর
আকাশের ওপারে আকাশ বিপুল নীলের সমারোহ ছড়িয়ে রেখেছে। সেসব নীলাভ মেঘমালা গলে গলে যেন নেমে আসে বাংলার আলপথে, মাঠে, ঘাসে, দিগন্তের আলোছায়ার রহস্যে। কবে, কোন সুদূর উজ্জয়িনীপুর থেকে, বর্ষার ঘনকালো মেঘমণ্ডল উড়ে গিয়ে পুঞ্জ পুঞ্জ তুলো দলবেঁধে নেমে আসে নতুন ধানের মঞ্জরিতে, কাশের গুচ্ছে, উলুখাগড়ার শীর্ষে। এভাবেই, রূপের অমল মাধুরী ছড়িয়ে, শরতের অভিষেক ঘটে, যেমন জীবনে অন্যদিকে আমাদের সাহিত্যে। কালিদাস থেকে সাম্প্রতিক কবিদের পঙক্তিমালায় তার স্বেদ ও শিশির দ্রবীভূত।
মেঘদূত মূলত বর্ষার কবিতা। তথাপি শরৎ ঋতুও কালিদাসের চোখে বুলিয়ে দিয়েছে মায়ার অঞ্জন। কবির দৃষ্টিতে এই নিসর্গশোভা যেন নববধূর মতো। শরৎকাল যেন কবির আরেক প্রিয়া। প্রকৃতির সঙ্গে নারীপ্রতিমার তুলনা সেখানে ব্যক্তিসত্তাকে বিধৃত করার অভিপ্রায় থেকে নয়, তাতে একান্তই কবিচৈতন্যের সৌন্দর্যপিপাসু সত্তার আকুলতা প্রকাশ পেয়েছে। আবার মধ্যযুগের কবি আলাওলের পদ্মাবতী কাব্যেও শরৎ ঋতু প্রেমের মাধুর্যে মুগ্ধতা ছড়ানো। এই নিসর্গবিন্যাস চণ্ডীদাসের চোখে ধরা পড়েছে বিরহের আকুলতা নিয়ে। মিলন এবং বিচ্ছেদের যুগপৎ সৌন্দর্যই এসব কবিতার উজ্জ্বল চিহ্নরূপ। যেমন :
১
আইল শরৎ ঋতু নির্মল আকাশ
দোলায় চামর কাশ কুসুম বিকাশ ॥
নবীন খঞ্জন দেখি বড়ই কৌতুক।
উপজিত থামিনী দম্পতি মনে সুখ ॥
[আলাওল]
২
ভাদর মাঁসে অহোনিশি অন্ধকারে।
শিখি ভেক ডাহুক করে কোলাহলে॥
তাওনা দেখিবো যঁবে কাঞ্চির মুখ।
চিন্তিতে চিন্তিতে মোর ফুটি জায়ির বুক ॥
[চণ্ডীদাস]
এসব কবিতা কেবল প্রকৃতির অপরূপ মাধুর্যের প্রকাশই নয়, একইসঙ্গে ব্যক্তিমনের সংযোগটিও লক্ষণীয়। মধ্যযুগের সঙ্গে আধুনিক কালের ভাষার ব্যবধানটুকু সরিয়ে নিলে বোঝা যায় কবিচৈতন্যে বোধের গভীরতা। প্রণয় প্রকাশে যেমন একজন অবিরল, অপরজন বিরহের তীব্রতায় এতটাই সংহত ও সংযত যে বিষাদময় কোনো শব্দ ব্যবহার না করেও অন্ধকার, মেঘ, ফুটি [বুক ফেটে যাওয়া ক্রিয়াপদের মধ্যযুগীয় প্রয়োগ?]―এরূপ কয়েকটি পদান্বয়েই তা উপলব্ধি করা যায়।
সুকুমার সেন বলেছেন, পদাবলি গান রচনার উৎপত্তি সম্ভবত নারী-সংগীতে। বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাস, দ্বিতীয় খণ্ডে তিনি জানিয়েছেন, ‘লক্ষ্মণসেনের দরকার হইতে মিথিলার রাজদরবারে, পাঠান আমলে পুনরায় গৌড়ের রাজদরবারে, এবং তথা হইতে ত্রিপুরার মতো কোন কোন প্রত্যন্ত রাজসভায় পদাবলীর―বিশেষ করিয়া ব্রজবুলি ভাষায় লেখা গানের জের চৈতন্যের বাল্যকাল পর্যন্ত চলিয়া আসিয়াছিল।’ ইতিহাসের চেরা স্রোতের প্রবাহ আমাদের লক্ষ্য নয়। তবে পদাবলি গানে/কবিতায় রাধার মানস-অভিব্যক্তি, রূপ, বিরহ ও মিলনের যেসব চিত্র ও চিত্রকল্প পাওয়া যায় তার সঙ্গে রয়েছে প্রকৃতির নিবিড় সংযোগ। যদিও সেসব কবিতায় বর্ষার নৈসর্গিক রূপ ও রূপান্তর অত্যন্ত গভীরভাবে রূপায়িত হয়েছে, তথাপি শরৎ ঋতুও রাধার বিরহ-বেদনার দৃশ্যকল্পে মানুষের চিরন্তন একাকীত্বই ফুটে উঠেছে। যেমন কবি বিদ্যাপতির বিখ্যাত পঙক্তিগুচ্ছ :
……………এ সখি হামারি দুখের নাহি ওর।
এ ভরা বাদর……………………. মাহ ভাদর
……………শূন্য মন্দির মোর ॥
ঝম্পি ঘন ……………………. গরজন্তি সন্ততি
……………ভূবন ভরি বরিখিন্তিয়া।
কান্ত পাহুন ……………………. কাম দারুণ
……………সঘন খরশর হন্তিয়া ॥
কুশিল শত শত ……………………. পাত-মোদিত
……………ময়ূর নাচত মাতিয়া।
মত্ত দাদুরী …………………….ডাকে ডাহুকী
……………ফাটি যাওত ছাতিয়া ॥
[বিদ্যাপতি]
শরতের কাশফুল নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের এখন যে মাতামাতি, তার মূলে কিন্তু রয়েছে এই ফুলের প্রতি রবীন্দ্রনাথের অতি প্রেম। কাশফুল শুধু নদীর দুই তীরেই দেখা যায় না, গ্রামের বাড়ির চৌহদ্দির বেড়াতেও দেখা যায়। মূলত কাশফুলকে জাতে তুলে দিয়ে গেছেন রবীন্দ্রনাথ।
যদিও এই কবিতায় তুমুল বর্ষার দৃশ্যকল্প পরিস্ফুট বলে মনে হয়। কিন্তু ‘ভাদর’ অর্থাৎ ভাদ্র মাস [শরৎ ঋতু] এখানে উপস্থিত। হতে পারে প্রকৃতির খেয়ালের মতোই―বর্ষার মেঘ যেমন শরতের পরিসীমা ছুঁয়ে যায়―এখানেও নিসর্গচেতনা ও ব্যক্তিহৃদয়ের বিরহবেদনা প্রলম্বিত। ঋতু থেকে ঋতুতে ওই বিদীর্ণ নিঃসঙ্গতার বিস্তার।
অরুণ আলোর অঞ্জলি
বাংরার ঋতুবৈচিত্র্য অনেকটাই প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে রবীন্দ্রনাথের গান ও কবিতায়। যদিও বর্ষার রূপ ও রূপান্তর তাঁর ছোটগল্প থেকে কবিতায় বিপুল বৈভবে ছড়িয়ে আছে। অন্যান্য ঋতুর প্রাকৃতিকতাও তাঁর সৃষ্টিকর্মে অসামান্য বৈচিত্র্য নিয়ে দেখা দিয়েছে। প্রাবন্ধিক ফরহাদ খান ‘শরৎ ঋতুর কথকতা’ রচনায় জানিয়েছেন :
রবীন্দ্রনাথের পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ব্রাহ্মধর্মের প্রকৃত প্রবর্তক। ব্রাহ্মসভায় প্রথম দিকে শুধু ধর্মালোচনা হতো। নীরস–গম্ভীর এ আলোচনায় সবাই আকর্ষণ বোধ করতেন না। ব্রাহ্মরা সবাই হিন্দু ছিলেন। বাঙালি হিন্দুদের তো বারো মাসে তেরো পার্বণ। ব্রাহ্ম হলেও তাঁদের অবচেতন মনে উৎসবের ভাবনা ছিল।
দেবেন্দ্রনাথ মহর্ষি হলেও তীক্ষ্ণ বৈষয়িক বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ ছিলেন। ব্যাপারটা সম্ভবত তিনি উপলব্ধি করেছিলেন। তারই ফলে জোড়াসাঁকোতে বাংলা নববর্ষের উৎসব প্রথম প্রবর্তন করেন, পরে আসে মাঘোৎসব। পৌষ মেলার প্রবর্তকও তিনি।
আবার শান্তিনিকেতনে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ যখন বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করলেন, তখন পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আরও কিছু নতুন উৎসব চালু করে দিলেন তিনি। সেগুলোর মধ্যে গান, নৃত্য ইত্যাদিও যুক্ত হলো।
শরতের কাশফুল নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের এখন যে মাতামাতি, তার মূলে কিন্তু রয়েছে এই ফুলের প্রতি রবীন্দ্রনাথের অতি প্রেম। কাশফুল শুধু নদীর দুই তীরেই দেখা যায় না, গ্রামের বাড়ির চৌহদ্দির বেড়াতেও দেখা যায়। মূলত কাশফুলকে জাতে তুলে দিয়ে গেছেন রবীন্দ্রনাথ। কাশফুল ও শরৎ নিয়ে রবীন্দ্রনাথের যেসব গান, তার মধ্যে ভাদ্র নেই বলে মনে হয়। তিনি মগ্ন ছিলেন আশ্বিন নিয়ে। কখনো কখনো মনে হয়, রবীন্দ্রনাথের শারদোৎসব কি আশ্বিনের দুর্গোৎসবের বিকল্প? ব্রাহ্মধর্মে পূজাও নেই, মূর্তিও নেই। নতুন উৎসব নিয়ে আশ্রমিকদের ব্যস্ত রাখার জন্যই কি শারদোৎসব?
রবীন্দ্রনাথের গানে ও কবিতায় শরৎ-বন্দনা :
১
আজি কি তোমার মধুর মুরতি
……….হেরিনু শারদ প্রভাতে!
হে মাত বঙ্গ, শ্যামল অঙ্গ
……….ঝলিছে অমল শোভাতে।
২
শরৎ, তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলি।
ছড়িয়ে গেল ছাপিয়ে মোহন অঙ্গুলি ॥
শরৎ, তোমার শিশির-ধোওয়া কুন্তলে
বনের-পথে-লুটিয়ে-পড়া অঞ্চলে
আজ প্রভাতের হৃদয় ওঠে চঞ্চলি ॥
মানিক-গাঁথা ওই-যে তোমার কঙ্কনে
ঝিলিক লাগায় তোমার শ্যামল অঙ্গনে।
কুঞ্জছায়া গুঞ্জরণের সঙ্গীতে
ওড়না ওড়ায় একি নাচের ভঙ্গীতে,
শিউলিবনের বুক যে ওঠে আন্দোলি ॥
কাজী নজরুল ইসলামের গানে ও কবিতায় শরৎ-বন্দনা পাই। তাঁর বিদ্রোহ ছিল একদিকে ঔপনিবেশিক শাসকের বিরুদ্ধে, দেশমাতৃকার মুক্তির লক্ষ্যে; অন্যদিকে প্রেম না-পাওয়ার আর্তিও ছিল কবির বিদ্রোহীচেতনার পিছনে। প্রলয়ের মধ্যেও তিনি খুঁজে নিয়েছেন সুন্দর। নজরুল অকপটে বলতে পেরেছেন, ‘ধ্বংস দেখে ভয় কেন তোর?―প্রলয় নূতন সৃজন-বেদন/আসছে নবীন―জীবন-হারা অসুন্দরে করতে ছেদন!’ এই অসুন্দরের বিরুদ্ধেই ছিল কবির সকল বিদ্রোহ। ফলে তাঁর প্রকৃতিচেতনাও এই সুন্দরের বাসনা থেকে। যেমন :
১
এসো শারদ প্রাতের পথিক
এসো শিউলি-বিছানো পথে।
এসো ধুইয়া চরণ-শিশিরে
এসো অরুণ-কিরণ-রথে ॥
২
সই পাতালো কি শরতে আজিকে স্নিগ্ধ আকাশ ধরণী?/নীলিমা বাহিয়া সওগাত নিয়া নামিছে মেঘের তরণী!/অলকার পানে বলাকা ছুটিছে, মেঘ-দূত-মন মোহিয়া!/চঞ্চুতে রাঙ্গা কলমীর কুঁড়ি―মরতের ভেট বাহিয়া!
জীবনানন্দের কবিতায় সরাসরি শরৎ ঋতুর উপস্থিতি উল্লেখযোগ্যমাত্রায় না থাকলেও নীল আকাশের যে বিপুল আবহ পঙক্তিতে পঙক্তিতে খেলা করে তাতে শারদীয় মুর্ছনা মনের মধ্যে ভেসে ওঠে। এমন দৃষ্টান্ত তাঁর কবিতায় রয়েছে অজস্র।
রবীন্দ্র-নজরুল বলয় থেকে নিজেকে অত্যন্ত দৃশ্যমানভাবে আলাদা করতে পেরেছিলেন জীবনানন্দ দাশ। কথাসাহিত্যে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন প্রকৃতিকে রূপায়ণ করেছেন পৃথক একটি সত্তা হিসেবে। একইভাবে জীবনানন্দের নিসর্গ মানবমনের গভীর সংবেদন ও আবেগে উপস্থিত হয়েছে তাঁর কবিতায়। হেমন্ত, শীত সম্ভবত তাঁর প্রিয় ঋতু। তাঁর অজস্র কবিতায় এই দুই ঋতুর সৌন্দর্য, আবেদন এবং রূপ বিভূষিত হয়েছে। শরতের সৌন্দর্যও জীবনানন্দের কবিতায় অম্লান। যেমন বনলতা সেন কাব্যের ‘তুমি’ কবিতায় :
নক্ষত্রের চলাফেরা ইশারায় চারদিকে উজ্জ্বল আকাশ;
বাতাসে নীলাভ হ’য়ে আসে যেন প্রান্তরের ঘাস;
কাঁচপোকা ঘুমিয়েছে―গঙ্গাফড়িং সে-ও ঘুমে;
আম নিম হিজলের ব্যাপ্তিতে প’ড়ে আছো তুমি।
‘মাটির অনেক নিচে চ’লে গেছো? কিংবা দূর আকাশের পারে
তুমি আজ? কোন্ কথা ভাবছো আঁধারে?
ওই যে ওখানে পায়রা একা ডাকে জামিরের বনে :
মনে হয় তুমি যেন ওই পাখি―তুমি ছাড়া সময়ের এ উদ্ভাবনে
আমার এমন কাছে―আশ্বিনের এতো বড় অকূল আকাশে
আর কাকে পাবো এই সহজ গভীর অনায়াসে―’
বলতেই নিখিলের অন্ধকার দরকারে পাখি গেলো উড়ে
প্রকৃতিস্থ প্রকৃতির মতো শব্দে―প্রেম অপ্রেম থেকে দূরে।
তবে জীবনানন্দের কবিতায় সরাসরি শরৎ ঋতুর উপস্থিতি উল্লেখযোগ্যমাত্রায় না থাকলেও নীল আকাশের যে বিপুল আবহ পঙক্তিতে পঙক্তিতে খেলা করে তাতে শারদীয় মুর্ছনা মনের মধ্যে ভেসে ওঠে। এমন দৃষ্টান্ত তাঁর কবিতায় রয়েছে অজস্র। পরবর্তীকালের কবিরাও শরতের প্রেমে পড়েছেন। লিখেছেন আনন্দ-বিরহের অপার সৌন্দর্যের লীলাময় পঙক্তিগুচ্ছ।
কনক বিশ্বাস। আড্ডাবাজ। তবে নিজস্ব বৃত্তের বাইরে তাকে পাওয়া যায় না। শিল্প-সাহিত্য সমালোচক। বই প্রকাশে আগ্রহী নন।